অন্যান্যঅর্থনীতিআইন আদালতআন্তর্জাতিককৃষি বার্তাখুলনাখেলাধুলাচট্টগ্রামচাকরিজাতীয়ঢাকাতথ্যপ্রযুক্তিধর্মনতুনপ্রচ্ছদপ্রবাসের খবরফিচারবরিশালবিনোদনভ্রমণমতামতময়মনসিংহরংপুররাজনীতিরাজশাহীলাইফস্টাইলশিক্ষা ও সাহিত্যসম্পাদকীয়সাক্ষাতকারসারাদেশসিলেটস্বাস্থ্য

চাকরি না পেয়ে কৃষক হলেন পদার্থবিজ্ঞানে মাস্টার্স করা সুকান্ত

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার গোপালপুর গ্রামের কৃষক সুভাষ অধিকারীর ছেলে সুকান্ত অধিকারী। পদার্থবিজ্ঞানে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর পাস করলেও চাকরি না পেয়ে ঘরে বেকার বসেছিলেন করোনা সংক্রমণের আগেই। কৃষক বাবার কাছে হাত পেতে ১০-২০ টাকা নিতে হতো তাকে। কিন্তু বাবা জমিতে গাধার মতো খাটছেন এটাও সহ্য হচ্ছিল না তার।

তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় সুকান্ত। একদিন ভোরে বাবার সঙ্গে কাঁচি নিয়ে জমিতে কাজ করা শুরু করেন, তাও তিন বছর হয়ে গেছে। এখন নিজের ও বর্গা জমি নিয়ে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুকান্ত পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন। তিনি গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতেও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান। এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিলেন। কালকিনির শশিকর মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসিতে এ প্লাস পান। গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন।

সুকান্ত অধিকারী বলেন, আমি চাকরির জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু ভাগ্য আমার সহায় হয়নি। এরই মধ্যে করোনা এসে আমাকে আঘাত করল এবং আমি আমার চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করলাম। এটা আমার বাবার দ্বারা বহন করা একটি অপমান ছিল. তার কষ্ট দেখে নিজের কাছেই খারাপ লাগছিল। তাই একদিন সকালে বাবার সঙ্গে জমিতে কাজ করা শুরু করি। এখন নিজের কিছু ও বর্গা নিয়ে জমি চাষ করছি। একটা চাকরি পেলে বেঁচে যেতাম। কিন্তু কে দেবে চাকরি?

শুকান্তের কাছে এক সময় প্রাইভেট পড়তো রিকো কবিরাজ নামে এক তরুণ। তিনি বলেন, সুকান্ত দা আমাদের এলাকার সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র। কিন্তু তিনি কোনো চাকরি পেলেন না। তাই এখন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জমিতে কঠোর পরিশ্রম করছেন।

সুকান্ত অধিকারীর শিক্ষক গোপালপুর পঞ্চপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস চন্দ্র বাড়ই জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুকান্ত আমার অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র ছিল। সুকান্ত একটা মেধার টুকরো। সে যে কেন এভাবে পড়ে আছে সেটি আমার বোধগম্য নয়। তার জন্য আমার ভীষণ কষ্ট হয়। তবে সুকান্ত গোপালপুর গ্রামের অজ পাড়াগাঁয়ে পড়ে থাকার কারণে এমনটি হতে পারে। তার একটা চাকরি হোক আমি সে প্রার্থনাই করি।

গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাল বাহাদুর জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুকান্ত অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। তার কাছে যারা প্রাইভেট পড়েছে তারা অনেকে ভালো ভালো চাকরি পেয়েছে। তবে তার অবস্থা কেন এমন হলো সেটা আমি বলতে পারবো না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button