বরিশাল

ট্রাকের হেলপার থেকে BCS ক্যাডারঃ শফিকুলের হার না মানার গল্প!

শফিকুলের বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পলাশ-বাড়ি চৌকিদার *পাড়ায়। বাঁশের চাটাই আর পাটের খড়ির বেড়া দিয়ে ছোট দুটি জরাজীর্ণ ঘর। সেখানে শফিকুলের পরিবার থাকত। শফিকুলের বাবা ছিলেন বিড়ি শ্রমিক। অভাবের কারণে ৮ম শ্রেণীতে পড়া লেখা বন্ধ করে দেন। তখন শিক্ষকরা তাকে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দেন। খাতা-কলমসহ অন্যান্য খরচ না থাকায় তার পড়া লেখা আবার কঠিন হয়ে পড়ে। বিভিন্নজনের সহযোগিতায় শফিকুল ২০০৫ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। মানবিক বিভাগ থেকে জেলার একমাত্র শিক্ষার্থী হিসেবে জিপিএ-৫ পান।

শফিকুল ইসলাম বলেন, “এসএসসির পর অনেকেই বলত, ‘পড়লে কী করব??????????’ তার থেকে ভালো কিছু শিখুন।তাহলে কিছু খেতে পারব।আমারও একটা অবুঝ মন ছিল,তাই বুঝলাম।’

এ কথা মাথায় রেখে এসএসসির পর তিনি ছুতোর কাজে যুক্ত হন। কিছুদিন জোগালির কাজ করেন। দিনে 30 টাকা। কিন্তু এমনকি যে একটি পোষা ছিল না. কারণ, একদিন কর্ম জোটে, অন্যদিন বেকারত্ব। পেশা পরিবর্তন করে সাইন-ব্যানার লেখা শুরু করেন। তাতেও আটকে যান তিনি। এরপর আছে ট্রাক-চালকের সহকারী।

শফিকুল বলছিলেন, ট্রাকে হেলপার থাকতে একদিন শুনলাম, আজ এসএসসির রেজাল্ট হবে। আমি তখন প্রায় 200 কিমি দূরে দিনাজপুরে। ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। মনে অনেক ভয়, এই প্লাস না পেলে পড়া বন্ধ করে দেব।

কুড়িগ্রামে পৌঁছে তার এক বন্ধু বলল, তুমি এ প্লাস (জিপিএ-৫) পেয়েছ। অনেকেই তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।

শফিকুল এখন ৩৫তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে যোগদান করে লালমনিরহাট সরকারি মজিদা খাতুন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন।

শফিক বলেন, “আমি ২ মে চাকরিতে যোগ দিয়েছি। প্রথম বেতনের টাকা দিয়ে আমি আমার বাবা-মায়ের বসার ঘরটা ভালো করে দেব। আমি আমার মতো অভাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করতে চাই। আমি নিশ্চিত করতে চাই যে কোনো টাকার অভাবে পড়া বন্ধ হয়ে যায়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button