ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী তমার ‘চা ওয়ালা’ হওয়ার গল্প!
বৈশ্বিক মহামারীর কারণে বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও নাজুক। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। লাখ লাখ শিক্ষার্থীকে বসে অলস সময় কাটাতে হয়।
কিন্তু এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও থেমে থাকেনি কিছু কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যারা অনেক প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ভূমিকায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
এমনই একজন হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের ছাত্রী শিউলি নাহার তমা।
# উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ কীভাবে এলো? – এই প্রশ্নের জবাবে তমা বলেন, “আমি একের পর এক স্বাবলম্বী হব। একজন উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ সেই চিন্তা থেকেই। কারণ নিজের দ্বারা কিছু অর্জন করার আনন্দ অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না। এটাই শালীনতা। যা করতে হবে, এবং এটি সেখানেই শেষ হওয়া উচিত। ভিন্ন কিছু নয়।
জানা গেছে, করোনার আবির্ভাবের পর ‘চা ওয়ালা’ নামে ফেসবুক পেজ থেকে শুরু হয় ই-কমার্স প্লাটফর্ম। এখান থেকে সিলেট ও শ্রীমঙ্গলের হবিগঞ্জের ১৩ ধরনের চা নিয়ে কাজ করছে তমা।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো নতুন চা যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
★ আপনি কখন এবং কিভাবে একজন উদ্যোক্তা হিসাবে আপনার যাত্রা শুরু করেছিলেন? – এই প্রশ্নের জবাবে তমা বলেন, আমিও চা খুব পছন্দ করি। তাই চা নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই ছিল।
কিন্তু পড়ায় ব্যস্ত থাকায় সময় মতো উঠতে পারিনি। তবে করোনা মহামারির কারণে মার্চ মাসে যখন দেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়, তখন দীর্ঘ ছুটি পেয়েছি, অনেকটা সময়।
তাই ভাবলাম আমার ইচ্ছা এবার পূরণ হতে পারে। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করি।
মাত্র ৪ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তমা। এখন পর্যন্ত মোট দুই লাখের বেশি পণ্য বিক্রি হয়েছে। তমা বলেন, “কিভাবে উদ্যোগটিকে আরও বড় করা যায় তা নিয়ে ভাবছি। আমি ‘চা ওয়ালা’কে একটি ব্যান্ডে রূপান্তর করার চেষ্টা করব।”
তমা ব্যবসায় আবদ্ধ হননি, তবে সবার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়েছেন। তার মতে, পরিবার ও পরিচিতজনরা আমাকে প্রথম থেকেই উৎসাহ দিয়ে আসছে। তারা আমাকে সবসময় নতুন কিছু যোগ করতে অনুপ্রাণিত করে।
আমি সবসময় তাদের কাছ থেকে সব ধরনের পরামর্শ এবং সমর্থন পেয়েছি।
ভবিষ্যতে ক্যারিয়ার হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন: “আমি আমার ক্যারিয়ারকে এই ‘চা’ উদ্যোগেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। এর বাইরেও কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমি সেই অনুযায়ী কাজ করছি।
অনেক শিক্ষার্থী তাদের প্রতিকূলতা কাটিয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সে লক্ষ্যে তমা বলেন, পরিকল্পনা বা ধারণাকে শক্তিশালী করার কাজ শুরু করুন। আপনি যে পণ্যটির সাথে কাজ করতে চান সে সম্পর্কে আগাম জেনে নিন।
তারপর বাজার মূল্য সম্পর্কে অনুসন্ধান করুন। পণ্যের মান বজায় রেখে সততার সাথে কাজ করলে সফলতা আসবেই। এটাই আমি বিশ্বাস করি।