নতুন বছর আগমন উপলক্ষে চলছে দোকানে-দোকানে ছাড়

নতুন বছর উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যে ছাড় দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্র্যান্ডের সামগ্রী, জুতা, কাপড়, খাবার হোটেলসহ বিভিন্ন শো-রুমে মূল্য ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নতুন বছরের আগমন ও এই বছরের বিদায় উপলক্ষে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ছোট-বড় অনেক দোকানেই। বিশেষ ছাড় ও অফার দেওয়া এইসব দোকানে ক্রেতাদেরও বাড়তি সমাগম লক্ষ্য করা গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বিপণি বিতান ও শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, পণ্য অনুযায়ী ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও লোকাল শপে। তার মধ্যে জুতার অন্যতম ব্র্যান্ড বাটা। এছাড়া এলজি, মার্সেল, ওয়ালটনের স্ক্যাচ কার্ড ঘষলে ক্যাশ ব্যাক ও আকর্ষণীয় পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বছরের শেষ ও ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এপেক্স তাদের পণ্যে ছাড় দিয়েছে। যদিও নতুন বছর উপলক্ষে তাদের এখনও ছাড়ের কোনও ঘোষণা আসেনি। তবে শিগগিরই তা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন শোরুম সংশ্লিষ্টরা।
নতুন বছর উপলক্ষে বিভিন্ন খাবার হোটেলও ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে। তার মধ্যে কেক, বিরিয়ানি, বার্গার, পিৎজা ও অন্যান্য খাবারের দোকান রয়েছে। রাফসান নামের পুরান ঢাকার একজন বার্গার ও পিৎজা দোকানদার বলেন, ‘নতুন বছর উপলক্ষে আমার দোকানে বছরের প্রথম তিন দিন বাই ওয়ান গেট ওয়ান বার্গার অফার রয়েছে। পিৎজাতেও ৫০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। আমার দোকানের বার্গার ও পিৎজা এমনিতেই সবার কাছে সেরা। তবুও নতুন বছরে আমার কাস্টমারদের খুশি রাখার জন্য এই স্পেশাল ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
লক্ষ্মী বাজারের কাপড় দোকানদার মাইনুদ্দিন বলেন, আমরা সাধারণত বাংলা নববর্ষে শাড়ি, চুড়ি থ্রি পিস সহ বিভিন্ন জিনিসপত্রে ছাড় দিয়ে থাকি। এছাড়া বিভিন্ন উৎসবে আকর্ষণীয় অফার থাকে। আগে হ্যাপি নিউ ইয়ারে তেমন একটা ছাড় দেওয়া হতো না। এবছর নিয়মিত কাস্টমারদের অনুরোধে প্রত্যেকটা পণ্যে ২০ শতাংশ করে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে এই ছাড় একেবারেই সীমিত সময়ের জন্য। শুধু এক এবং দুই তারিখ পর্যন্ত অফার রয়েছে।
রত্না আক্তার নামের এক উদ্যোক্তা বলেন, নতুন বছর উপলক্ষে আমার ছোট্ট এই কাপড়ের দোকানে ৩০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ আমার দোকানের সকল পণ্যে এই ছাড় প্রযোজ্য। আমার দোকানে এমনিতেই রেগুলার কাস্টমার আছে। তবুও কাস্টমারদের খুশি করার জন্য নতুন বছর উপলক্ষে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে। নতুন বছরের দিনগুলো সবার জন্য যেন সুখের হয়, সেই জায়গা থেকে সবার জন্য আমার এই উদ্যোগ।
তবে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে নার্গিস আক্তার নামের একজন ক্রেতা বলেন, পণ্যে ছাড় শুধু চোখের ফাঁকি। রেগুলার প্রোডাক্টের দাম বাড়িয়ে সেখান থেকে ২০-৩০ শতাংশ ছাড় দিয়ে আবার সেই একই দাম রাখা হয়। ফলে ছাড় দেওয়া আসল অর্থেই কোনও কাজের না। আবার অনেকে অনেক দিনের পড়ে থাকা মালামাল ছাড় দেয় বিক্রি করার জন্য। ছাড় দেওয়া পণ্য কখনোই এক নম্বর প্রোডাক্ট হয় না। এখানে কোনও না কোনও ঝামেলা থাকেই। এজন্য সচেতনরা ছাড় দেওয়া পণ্য কমই কেনে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার নতুন বছর উপলক্ষে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। লক্ষীবাজারে অবস্থিত বাচ্চাদের কোচিং সেন্টারের পরিচালক তানজিম ভূঁইয়া বলেন, ‘নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে যারা আমার কোচিং সেন্টারে তাদের বাচ্চাকে ভর্তি করাবে তাদের ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। তবে এটা আন অফিসিয়ালি সিদ্ধান্ত।’
এছাড়াও আহমেদ স্কয়ার মার্কেটের তানজিল’স এ সকল পণ্যে ৩০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। নাজমেটিক কালেকশনের ওনার বলেন, ‘নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে আমার দোকানের সকল প্রোডাক্টের উপরে ৩০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে।’