পরিবারের অনুপ্রেরণায় ১ম বিসিএসেই ক্যাডার হলেন রাসেল!

মোঃ রাসেল হোসেন ৩৬তম বিসিএসে আনসার ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছেন। পিতা মোঃ সাইফুল ইসলাম, মাতা দেলোয়ারা বেগম রাঙ্গা। তিনি ১৯৯৩ সালে নাটোরে জন্মগ্রহণ করেন। নাটোর শের-ই-বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ঢাকা কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি! তিনি সম্প্রতি তার বিসিএস জয়, ভবিষ্যতের স্বপ্ন এবং সাফল্যের গল্প জাগো নিউজের সাথে শেয়ার করেছেন।
* আপনার শৈশব কেমন ছিল?
মো: রাসেল হোসেন: আমার ছেলে বেলা এবং আরও দশজন সাধারণ ছেলে মেয়ে। জন্ম ও বেড়ে ওঠা নাটোর শহরে। প্রথমে মায়ের হাতে খড়ি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা যথাক্রমে নাটোরের বড় হরিশপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শেরেবাংলা উচ্চ শিক্ষায় অতিবাহিত হয়। ছোটবেলায় সময়মতো স্কুলে যেতাম, সন্ধ্যায় খেলতাম
বাড়ি ফিরে বাবা-মা আমাকে বকাঝকা করে। সন্ধ্যায় পড়তে বসলাম। রোল 1 বা 2 ছোটবেলা থেকেই ক্লাসে। সব মিলিয়ে আমার শৈশব খুব উপভোগ করেছি। আমি যদি কখনো সুযোগ পাই, আমি আমার শৈশবে ফিরে যেতে চাই।
* অধ্যয়নে কোন বাধা ছিল?
মোঃ রাসেল হোসেন: শুধুমাত্র একটি গল্প বা একটি কল্পনা বাধাবিহীন একটি জীবন পূরণ করতে পারে। বাস্তবে, জীবন কখনও বাধা ছাড়া হয় না। আমারও পড়া-লেখার কিছু অসুবিধা ছিল এবং আমি সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছানুযায়ী সেগুলোর সমাধানও পেয়েছি। স্কুলে থাকাকালীন ভালো ফলাফলের কারণে
আমি সবসময় পড়াশোনা করার জন্য বৃত্তি পেয়েছি। প্রথম আলোর ‘অদম্য মেধাবী’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি ঢাকা কমার্স কলেজে সম্পূর্ণ অর্থায়নের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে লেখা-পড়ার সুযোগ পাই। সেখানকার শিক্ষকদের অকৃত্রিম আন্তরিকতা, সহযোগিতা ও ভালো আবাসন কখনোই ভোলার নয়। কিছু সৎ ভালো মানুষও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়
দিকনির্দেশনায় সময় আমার জন্য কঠিন ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগে ভর্তির পর বিভাগ থেকে পৃষ্ঠপোষকতাও পেয়েছি। সব মিলিয়ে পড়ার পথে প্রতিবন্ধকতা ছিল, কিন্তু তা কখনই প্রকাশ পায়নি। এ জন্য আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক কৃতজ্ঞ।
* কবে থেকে বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছেন?
মো: রাসেল হোসেন: বিভাগীয় ও ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে বিবিএ শেষ বর্ষের আগে চাকরির প্রস্তুতি শুরু করার কথা ভাবার সুযোগ পাইনি। যখন ভাবতে শুরু করলাম; তখন আমি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ক্যারিয়ার ছিলাম
আমি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমার লক্ষ্য বরাবরই সরাসরি জনগণের জন্য কাজ করা। অন্যান্য পেশার তুলনায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে সুযোগ বেশি পাওয়া যায়।
* বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই:
মোঃ রাসেল হোসেনঃ ৩৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০ জুন ২০১৬। তখন আমি এমবিএ ছাত্র ছিলাম। ছয় মাস আগে থেকেই বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করি। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা 26 ডিসেম্বর, 2016 এ অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল 26 ফেব্রুয়ারি, 2016 তারিখে প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
একই বছরের 8-13 আগস্ট। লিখিত পরীক্ষা শেষ করার পর, আমি একটি প্রাইভেট ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার হিসাবে আমার কর্মজীবন শুরু করি। প্রায় 1 বছর পর, 1 জুলাই, 2019, লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। 12 সেপ্টেম্বর 2019 তারিখে পিএসসির বিজ্ঞ সদস্য অধ্যাপক ড. শাহ আব্দুল লতিফ স্যারের বোর্ডে ভাইভা কোন অংশ নেই। যদিও VIVA আমার পছন্দের নয়
আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বিজ্ঞ বোর্ডের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। অজানা প্রশ্নের উত্তরে আমি বিনয়ের সাথে বললাম ‘জানি না’। 36 তম বিসিএস যাত্রার গল্প অবশেষে 30 জুন, 2020 চূড়ান্ত ফলাফলের সাথে শেষ হয়েছিল; যদিও তা এখনো গেজেট করা হয়নি।
* কতজন বিসিএস ক্যাডার আছে?
মোঃ রাসেল হোসেন: বর্তমানে আমি আনসার ক্যাডারে ‘সহকারী পরিচালক/সহকারী জেলা কমান্ড্যান্ট/ব্যাটালিয়ন ডেপুটি কমান্ডার’ পদের জন্য সুপারিশ পেয়েছি।
* আপনি কি কারো কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন?
মোঃ রাসেল হোসেন: যেকোনো ভালো কাজের অনুপ্রেরণা শুরুতে পরিবার থেকেই আসে। আমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। পাশাপাশি আমার প্রতি আমার শুভানুধ্যায়ীদের প্রত্যাশা; সেটাও আমার কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
* আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
মোঃ রাসেল হোসেনঃ আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব সততা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করতে পারাকে আমি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে দেখছি।