রংপুর

পড়শোনার খরচ চালাতে ছোলা-মুড়ি বিক্রি করা জাহিদুলই আজ বিসিএস ক্যাডার!

জাহিদুলকে দিনমজুরের কাজ করতে হয়েছে। জাহিদুলের বাবা ট্রেনে এসব বিক্রি করতেন। মা কোদাল দিয়ে জমি চাষ করতেন। বড় ভাই চাচার জন্য কাজ করত। সেখান থেকে প্রতি ঈদে ছাপা কাপড়ের জামা তৈরি করতেন। সেটা জাহিদুলের সারা বছরের পোশাক। বিদ্যা*লয়ের বন্ধুরা ঈদের ছুটিতে শিক্ষা সফরে গেলে বা তাণ্ডব চালাতে গেলে জাহিদুল বাজারে ছোলা বিক্রি করতেন। আপনি কি কখনও আপনার ভাইয়ের দোকানে রাতে কাজ করেছেন?

জাহিদুল ইসলাম এসএসসি পরীক্ষায় এলার অনেক স্কুলের মধ্যে সেরা ফলাফল করেছে। ভর্তি হন রাজবাড়ী সরকারি কলেজে। বড় ভাই ভাত নিয়ে যেতেন। যে মাস লাগবে. 2005 সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। কোচিং তো দূরের কথা, জাহিদুল ইসলামের বই কেনার সামর্থ্য ছিল না।

উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর পাংশা কালে স্নাতক পাস কোর্সে ভর্তি হন এবং টিউশন শুরু করেন। সেই টাকা দিয়ে পরের বছর ভর্তি পরীক্ষা দেন। তিনি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ব বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হন। দুশ্চিন্তা আবার চাপা দিল ঘাড়ে। ভাবুন তো পড়ার খরচ কোথায় পাবেন!

একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে শিক্ষা ঋণ নিয়েছিলেন। টিউশনিও যোগ দিল। জীবন পড়া কঠিন। তিনি প্রথম শ্রেণীতে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেন। পড়াশুনা শেষ। কি করো? ভাবতেই গুরু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন। সেই সময়ের কথা মনে করে জাহিদুল বলেন, আমি হাঁটতে পারি না। একদিকে ঋণ, অন্যদিকে আমার অসুস্থতা। আমি হাঁটতে পারি না, আমার পকেটে টাকা নেই, আমি মানুষের মধ্যে হাঁটতে পারি না। ঢাকায় গিয়ে চাকরির পরীক্ষা দেব। কোথায় থাকব?

৩৪তম বিসিএসে আমি কৃষি বিপণন ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করি। এই ঢাকা শহরে আমি স্বাবলম্বী, বাড়ি ভাড়া- এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button