ধর্ম

মাক্কী সূরা কয়টি ?

পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন বিষয়ের কয়েকটি পরিসংখ্যান

মোট সুরা – ১১৪
মক্কী সুরা – ৮৬
মাদানী সুরা – ২৮
রুকু – ৫৫৪আয়াত সংখ্যা – ৬২৩৬

কোরান মাজিদে দুই ধরনের সুরার বৈশিষ্ট্য দেখা যায়

১। মাককী সুরা

২। মাদানী সুরা

মাক্কী সূরা – মাক্কী সূরা কয়টি ?

ক্বোরআনের মাক্কী সূরা বলতে
মুহম্মদের [স.] হিজরতের পূর্বে অবতীর্ণ
সূরাগুলোকে বোঝানো হয়।
মুহাম্মদের [স.] হিজরতের সময় অর্থাৎ
মদীনায় পৌঁছার পূর্ব পর্যন্ত যা
অবতীর্ণ হয়েছে তাও মাক্কী সূরা
হিসেবে পরিগণিত হয়। তৎপরবর্তী
সময়ে অবতীর্ণ হওয়া সূরাসমূহ মাদানী
সূরা হিসেবে গণ্য।
মাক্কী সূরার সংখ্যা ও
তালিকা
মাক্কী সূরার সংখ্যা মোট ৮৬ টি।

মাক্কী সূরার বৈশিষ্ট্য – মাক্কী সূরা কয়টি ?

১। মাক্কী সূরাসমূহে ﺁﻳﺎﺕ ﺍﻟﺴﺠﺪﺓ
অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি অবনত হওয়ার
কথা বলা হয়েছে।

২। মাক্কী সূরাসমূহে কালা ﻛﻼ
(কখনও না) শব্দটি আছে।

৩। ২২নং সূরা ব্যতীত মাক্কী
সূরাসমূহে ﻳﺎﺃﻳﻬﺎ ﺍﻟﻨﺎﺱ (হে
মানবজাতি) কথাটি উল্লেখ
আছে, কিন্তু ﻳﺄﻳﻬﺎ ﺍﻟﻠﺬﻳﻦ ﺁﻣﻨﻮﺍ (হে
মুমিনগণ) বাক্যাংশটি নেই।

৪। মাক্কী সূরাসমূহে তাওহীদ এবং
রিসালাতের প্রতি আহবান
জানানো হয়েছে।

৫। মৃত্যুর পরবর্তী পুনরুত্থান, পার্থিব
জীবনের সকল কৃতকর্মের হিসাব-
নিকাশ মাক্কী সূরাসমূহে বর্ণিত
হয়েছে।

৬। মাক্কী সূরাসমূহে পূর্ববর্তী
বাণীবাহক (নবী) ও তাঁদের অবাধ্য
অনুসারীগণের (উম্মতের) করুণ
পরিণতির কাহিনী বর্ণনা করা
হয়েছে।

৭। মক্কী সূরাগুলো আকারে ছোট
হলেও অতীব ভাবগাম্ভির্যপূর্ণ।

৮। মাক্কী সূরাসমূহে বিধর্মীদের
(মুশরিকদের) রক্তপাত ও
হত্যাযজ্ঞের কাহিনী বর্ণনা করা
হয়েছে।

৯। মাক্কী সূরাসমূহে অন্যায়ভাবে
ইয়াতিমদের সম্পদ ভোগ, কন্যা-
সন্তানদের জীবন্ত দাফন প্রভৃতি
কুপ্রথা ও কু-আচরণ সম্পর্কিত বিষয়
বর্ণিত হয়েছে।

১০। মাক্কী সূরাসমূহে প্রসিদ্ধ
বস্তুসমূহের নামে শপথের মাধ্যমে
উপস্থাপিত বিষয়ের প্রতি জোর
দেয়া হয়েছে।

১১। মাক্কী সূরাসমূহে বহু দেবতায়
বিশ্বাসীদের দাবীকে মিথ্যা
প্রতীয়মান করে আল্লাহ’র সাথে
কারো শরীক নেই এবিষয়ে বর্ণনা
উপস্থাপিত হয়েছে।

১২। মাক্কী সূরাসমূহে
বিভীষিকাময় কিয়ামত (পৃথিবীর
শেষ দিবস), স্বর্গের (বেহেশতের)
অনুপম শান্তি এবং নরকের
(জাহান্নামের) কঠোর শাস্তির
বর্ণনা প্রাধান্য পেয়েছে।

মাদানী সূরা – মাক্কী সূরা কয়টি ?

কোরআনের মাদানী সূরা বলতে
মুহম্মদের [স.] হিজরতের পরে অবতীর্ণ
সূরাগুলোকে বোঝানো হয়। মুহাম্মদ
[স.] এর হিজরতের পরে অর্থাৎ মদীনায়
আগমনের পর অবতীর্ণ হওয়া সূরাসমূহ
মাদানী সূরা হিসেবে গণ্য।
মাদানী সূরার সংখ্যা ও
তালিকা
মাক্কী সূরার সংখ্যা মোট ২৮ টি।

আরও পড়ুন : সূরা তওবার শেষ দুই আয়াত | উচ্চারণ ও অর্থসহ

মাদানী সূরাসমূহের তালিকা
নিম্নে দেয়া হলো: সূরা বাকারাহ
সূরা আলে ইমরান সূরা নিসা সূরা
মায়িদা সূরা আনফাল সূরা তাওবা
(বারা-আত) সূরা হাজ্জ সূরা নূর সূরা
আহযাব সূরা মুহাম্মাদ(আসূরাকিতাল)
সূরা ফাত্হ সূরা হুজুরাত সূরা হাদীদ
সূরা মুজাদালা সূরা হাশ্র সূরা
মুমতাহিনা সূরা সফ সূরা জুমুআ’হ সূরা
মুনাফিকুন সূরা তাগাবুন সূরা তালাক
সূরা তাহরীম সূরা বাইয়্যেনাহ সূরা
মাউন সূরা নাসর

মাদানী সূরার বৈশিষ্ট্য – মাক্কী সূরা কয়টি ?

1. মাদানী সূরায় ইবাদাত,
সামাজিক আচার-ব্যবহার,
রীতিনীতি, পরস্পরের লেনদেন,
হালাল-হারাম, উত্তরাধিকার আইন,
জিহাদের ফযীলত, ব্যবসা-বাণিজ্য,
পররাষ্ট্র নীতি, বিচার ব্যবস্থা,
দন্ডবিধি, পারিবারিক, আর্থ
সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও সমষ্টিগত
জীবনের যাবতীয় সমাধানের
উল্লেখ্য রয়েছে।

2. মাদানী সূরায় বিশেষভাবে
আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও
খ্রিস্টানদের প্রতি ইসলাম গ্রহণের
জন্য আহবান জানান হয়েছে।

3. এতে আহলে কিতাবদের
সত্যবিমুখতার কথা এবং তাদের
কিতাব বিকৃতি সাধনের কথা বর্ণনা
করা হয়েছে।

4. এতে মুনাফিকদের কপট আচরণের
কথা বর্ণনা করা হয়েছে এবং
ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের ষড়যন্ত্র
উদঘাটন করা হয়েছে।

5. মাদানী আয়াত ও সূরা দীর্ঘ। এতে
শরীআতের বিধি-বিধানকে
স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

পবিত্র কুরআনে মোট ১১৪টি সূরা রয়েছে। এই সূরাগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি অংশ হচ্ছে মাক্কী সূরা অপরটি মাদানী সূরা।

মাক্কী ও মাদানী সূরা – মাক্কী সূরা কয়টি ?

মাক্কী সূরা বলতে মহানবি (স.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পূর্বে অবতীর্ণ হওয়া সূরাসমূহকে বোঝায়। আল কুরআনে মাক্কী সূরার সংখ্যা মোট ৮৬টি। আর মহানবি (স.)-এর মদিনায় হিজরতের পর যে সমস্ত সূরা নাজিল হয়েছে সেগুলোকে মাদানী সূরা বলে। পবিত্র কুরআনে মাদানী সূরার সংখ্যা মোট ২৮টি।

মাক্কী ও মাদানী সূরার বৈশিষ্ট্য – মাক্কী সূরা কয়টি ?

মাক্কী সূরার বৈশিষ্ট্যগুলো হলোঃ

মাক্কী সূরাসমূহে তাওহীদ ও রিসালাতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মৃত্যুর পরবর্তী জীবন কেয়ামত, জান্নাত জাহান্নাম তথা আখিরাতের বর্ণনা মাক্কী সূরা সমূহ প্রাধান্য পেয়েছে।
শিরক ও কুফরের পরিচয় বর্ণনা করে এগুলোর অসারতা প্রমাণ করা হয়েছে।
মুশরিক ও কাফেরদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে।

এতে পূর্ববর্তী মুশরিক ও কাফেরদের হত্যাযজ্ঞের কাহিনী, ইয়াতিমদের সম্পদ হরণ করা, কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া ইত্যাদি কুপ্রথা ও কু আচরণের বিবরণ রয়েছে।
পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণের সফলতা ও তাদের অবাধ্যদের শোচনীয় পরিণতির বর্ণনা করা হয়েছে।
এ সূরাগুলোতে শরীয়তের সাধারণ নীতিমালা উল্লেখ রয়েছে।
এতে উত্তম চরিত্র বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে।
মাক্কী সূরা সমূহ সাধারণত আকারে ছোট এবং আয়াতগুলো তুলনামূলকভাবে ছোট।
এর শব্দমালা শক্তিশালী, ভাবগম্ভীর ও অন্তরে প্রকম্পন সৃষ্টিকারী।
এতে প্রসিদ্ধ বিষয়সমূহ শপথের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।

মাদানী সূরার বৈশিষ্ট্যগুলো – মাক্কী সূরা কয়টি ?

মাদানী সূরা সমূহ ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রতি ইসলামের আহবান জানানো হয়েছে।
এতে আহলে-কিতাবের পথভ্রষ্টতা ও তাদের কিতাব বিকৃত কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
মাদানী সূরা সমূহ নিফাকের পরিচয় ও মুনাফিকের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ রয়েছে।
ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, জাতীয়, আন্তর্জাতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক নীতিমালা বর্ণিত হয়েছে।
পারস্পরিক লেনদেন, উত্তরাধিকার আইন, ব্যবসা বাণিজ্য, ক্রয়-বিক্রয় সহ যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিধান বর্ণিত হয়েছে।
বিচারব্যবস্থা, দন্ডবিধি, জিহাদ, পররাষ্ট্র নীতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে
ইবাদতে রীতিনীতি, সালাত, সাওম, হজ, যাকাত ইত্যাদি বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।
শরীয়তের বিধি-বিধান, ফরজ, ওয়াজীব, হালাল হারাম ইত্যাদির সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে।
মাদানী সূরা গুলো ও এর আয়াতসমূহ তুলনামূলকভাবে দীর্ঘ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button