মেসিদের বিজয়ে আর্জেন্টিনায় আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা

আর্জেন্টিনার সর্বত্র এখন উৎসবের বর্ণচ্ছটা। বুয়েনস এইরেসের রাস্তায় জনস্রোত। আর্জেন্টাইনরা অপেক্ষায় আছেন, কখন লিওনেল মেসিরা বিমান থেকে দেশের মাটিতে পা রাখবেন। ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে বিশ্বজয় করা বীরদের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠবে পুরো আর্জেন্টিনা।
এমন আনন্দের দিনে কি আর অফিস–আদালত বা স্কুল–কলেজ করা যায়! আর্জেন্টিনার সরকারও এটা বুঝতে পেরেছে। তাই তো দেশটির প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ ভেবেছেন—আজকের দিনটা হোক আকাশি–নীলের, আজকের দিনটা হোক উৎসব আর আনন্দে মেতে ওঠার। এমন দিনে দরকার নেই অফিস–আদালতের, দরকার নেই স্কুল–কলেজের। কাজ বাদ দিয়ে সবাই সামিল হোক উৎসবে।
প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ আর্জেন্টিনায় আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন। মেসিদের বহনকারী বিমান এজেইজা বিমানবন্দরে নামার কথা বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে। বিশ্বকাপ ট্রফি জিততে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের অপেক্ষা ঘোচানো নায়কদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত পুরো আর্জেন্টিনা।
বিমানবন্দরে এরই মধ্যে ভিড় করতে শুরু করেছেন সর্বস্তরের মানুষ। রাস্তায় নেমেছে লাখো মানুষের ঢল। সবার গায়ে আর্জেন্টিনার আকাশি–নীল জার্সি, হাতে বা গায়ে জড়ানো আর্জেন্টিনার পতাকা। তাঁরা নাচছেন, গাইছেন। ওপর থেকে দেখলে মনে হয় যেন আকাশি–নীলের স্রোত বয়ে চলেছে রাস্তা দিয়ে। থেমে থেমে সেই স্রোত থেকে গগণবিদারী চিৎকার ভেসে আসছে—ভামোস আর্জেন্টিনা (এগিয়ে যাও আর্জেন্টিনা)।
আর্জেন্টিনার মানুষের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে মেসিরা ট্রফি নিয়ে রাস্তায় ঘুরবেন ছাদ খোলা বাসে। সেই বাসে যখন মেসিরা একে একে উঠে আর্জেন্টিনার মানুষদের উদ্দেশে কথা বলবেন, ট্রফি উঁচিয়ে ধরবেন, তখন জনতা আবেগে কতটা ভাসবেন আর উদ্যাপনে কতটা উন্মত্ত হবেন, কে জানে!
মেসিদের উদ্যাপন অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল রোববার রাতে লুসাইলের গঞ্জালো মন্তিয়েলের নেওয়া টাইব্রেকার শটটার পরেই। ওই শটেই নিশ্চিত হয়ে যায় আর্জেন্টিনার জয়, আর তার পর থেকেই লুসাইল স্টেডিয়াম আকাশি-নীলময়। পরিবার নিয়ে তাৎক্ষণিক উদ্যাপন, পুরস্কার গ্রহণ, ট্রফি নিয়ে ছবি তোলা পর্ব শেষে ড্রেসিংরুমেও এক দফা নেচেগেয়ে উদ্যাপন করেছেন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়েরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে সেই উদ্যাপনে মেসি, এমিলিয়ানো মার্তিনেজ আর লাওতারো মার্তিনেজকেই বেশি উল্লাস করতে দেখা গেছে। কেউ টেবিলের ওপর উঠে নাচছেন, কেউ মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছেন, আবার দল বেঁধে কোরাস ধরেছেন কখনো কখনো।
টাইব্রেকারের নায়ক গোলরক্ষক মার্তিনেজ তো সবাইকে নিয়ে নাচতে নাচতেই হঠাৎ থেমে গিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্য! ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেও যে এমবাপ্পে ফ্রান্সকে জেতাতে পারলেন না, সে জন্যই তাঁর জন্য ওই কপট ‘শোক’ মেসিদের।