রিকশাচালক বাবার দুই ছেলে এখন বিসিএস ক্যাডার!

রিকশাচালক বাবার দুই ছেলে এখন বিসিএস ক্যাডার!

রিকশাচালক বাবার দুই ছেলে এখন বিসিএস ক্যাডার!

আব্দুল খালেক শেখ, বয়স ৬১ বছর। রিকশা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করে তিন ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। আব্দুল খালেক শেখের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের কাঁথাল গ্রামে হলেও মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে তিনি খুলনায় বসবাস করছেন।

তিনি কয়েক বছর ধরে খুলনা শিপইয়ার্ডে কাজ করেছেন। এখনো ওই এলাকায় বসবাস করছেন। ৪০ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন।তিনি তিন ছেলের জনক। তার স্ত্রী ফাতেমা একসময় খুলনার বন্ধ দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।

আবদুল খালেক শেখ জানান, তার বড় ছেলে টুটুল শেখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি নিয়ে ৩৪তম বিসিএসে গাইবান্ধায় যোগ দেন। তার বড় ছেলে ইব্রাহিম শেখ খুলনার সরকারি বিএল কলেজে বিভাগে পড়াশোনা শেষ করে ৩৬তম বিসিএস পাস করে ঢাকায় রয়েছেন।

ছোট ছেলে সোহরাব শেখ খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেছেন। তিনি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগেও অনুশীলন করছেন।

তিনি বলেন, আমি শিক্ষিত না হলেও ছেলেদের লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করিনি। সংসার চালানো কষ্টকর হলেও ছেলেদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। তবে শুধু আমার প্রচেষ্টাই নয়, ছেলেদের আগ্রহ ও মেধাও তাদের শিক্ষিত হতে সক্ষম করেছে। ”

ছেলেদের দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে আব্দুল খালেক শেখ বলেন, আমি একা রোজগারের টাকা দিয়ে অনেকের খরচ বহন করতে পারতাম না। তাই প্রাইভেট পড়িয়ে নিজেদের টিউশনের খরচ মেটাচ্ছেন তারা। আমার স্ত্রী সন্তানদের লেখাপড়া করতে আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।

তার জীবনের তাৎপর্য জানতে চাইলে গর্বিত পিতা আব্দুল খালেক বলেন, আমি যখন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব তখন সবাই বলবে আমি তাদের মানুষ বানিয়েছি। আশা করি তাদের কাজের কারণে কেউ আমাকে অপমান করতে পারবে না যেখানে আমি। ছেলেদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি।”

ছেলেরা রিকশা চালাতে অস্বীকার করে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ছেলেরা আমাকে রিকশা চালানো বন্ধ করার জন্য চাপ দিচ্ছে। পুরো টাকা পেলে ছেড়ে দেব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *