BusinessSportsখেলাধুলাজাতীয়বিনোদন

সিইও হিসেবে সাকিবকে আমন্ত্রণ জানাতে প্রস্তুত বিসিবি! দায়িত্ব পেলে ২ মাসে বিপিএলকে বদলে দেবেন সাকিব

Sakib al hasan
File Picture Sakib al Hasan

গালফ অয়েল বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে একদিনের জন্য দায়িত্ব পালন করেছিলেন সাকিব আল হাসান। গালফ অয়েলের অফিসে বসেই সাকিব জানিয়েছিলেন, বিপিএলের সিইওর দায়িত্ব পেলে দুই মাসের মধ্যেই বিপিএলের সব অসংগতি দূর করে দেবেন তিনি।

বাঁহাতি অলরাউন্ডারের এই ঘোষণার পরপরই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিপিএলের নানামুখী সমস্যার সঙ্গে একমত পোষণ করেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও।

গালফ অয়েলে সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে সাকিব সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘বিপিএলের সিইও হলে আমার বেশি দিন লাগবে না। আমার ধারণা, এক থেকে দুই মাস লাগবে সবকিছু ঠিক করতে। দুই মাসও লাগার কথা না, দুই মাস অনেক দূরের কথা বলছি। পুরনো সবকিছু বাদ দিয়ে নতুন করে আবার ড্রাফট হবে, ফ্রি টাইমে বিপিএল হবে। আধুনিক টেকনোলজি থাকবে। ব্রডকাস্ট ভালো থাকবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যু থাকবে।’

সাকিবের এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান শেখ সোহেল। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে সাকিবকে আগামী বছর সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিতে বলেছেন তিনি, ‘সাকিব আগ্রহ প্রকাশ করেছে, আমি প্রথমে সাকিবকে ওয়েলকাম জানাই। ও (সাকিব) বিপিএলের সিইও হিসেবে আসতে চায়। ও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গভর্নিং কাউন্সিলে তাকে আসার জন্য ওয়েলকাম জানাই। ও যদি চায় সামনের বছর এসে দায়িত্ব পালন করুক। বিপিএলে কাজ করুক, আমাদের সাহায্য করুক।’

আপনারা কি সাকিবকে স্বাগত জানাবেন, এমন প্রশ্নে শেখ সোহেল বলেছেন, ‘অবশ্যই ওয়েলকাম করবো। এখন তো সে খেলোয়াড় হিসেবে আসতে পারবে না। সে সামনের বছর চলে আসুক।’

সাকিব বিপিএলের সমালোচনা করে বলেছিলেন, ‘বিপিএল থেকে প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকে। বিষয়টি নিয়ে বিপিএলের সদস্য সচিব ঈসমাইল হায়দার মল্লিক সাকিবকে খোঁচা দিলেন, ‘আমি তো দেখি সাকিব প্রিমিয়ার ডিভিশনের অনেক খেলা মিস দেয়। কিন্তু বিপিএল তো কখনও মিস দেয় না। ওকে যদি পাল্টা প্রশ্ন করি, ‘প্রিমিয়ার ডিভিশনের তো অনেক খেলা খেলেনি। বলছে যে প্রিমিয়ার ডিভিশন থেকে বিপিএল খারাপ। কিন্তু বিপিএলের কোনও আসরের খেলা তো বাদ দেয়নি। প্রিমিয়ার ডিভিশন তো অনেক সময় খেলে না।’

একদিনের জন্য গালফ অয়েল বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেন সাকিব আল হাসান। নিয়মিত রুটিনের বদলে নতুন এক অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। তবে আসল পরিচয়ে ঠিকই থাকলেন। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে ঠিকই কথা বলেছেন।

সাকিবের কথায় স্পষ্ট বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল পুরোপুরি ব্যর্থ। বাংলাদেশের সেরা ওপেনার স্পষ্ট করেই বলেছেন, দায়িত্ব পেলে ২-১ মাসের মধ্যেই বিপিএল-এর সবকিছু বদলে দেবেন তিনি।

২০১২ সালে বিপিএল মাঠে গড়ানোর পর ব্যাপক আলোড়ন হয়েছিল। দলের নিলাম, খেলোয়াড় নিলাম থেকে শুরু করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাক লাগিয়ে দেয় বিসিবি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিপিএল বর্ণহীন হয়ে পড়ে। এবার তো আরও হ-য-ব-র-ল অবস্থা। আধুনিক ক্রিকেট ডিআরএস ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। অথচ গতবারের মতো এবারও বিপিএল শুরুই হচ্ছে ডিআরএস ছাড়া। এমনকি বিপিএলের ১১তম আসরের স্পন্সরও এখন পর্যন্ত পায়নি আয়োজকরা। এছাড়া ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোও পেশাদারিত্ব আনতে পারেনি। ২-১ টি ফ্র্যাঞ্চাইজি এখনও অনুশীলন জার্সিরও যোগান দিতে পারেনি।

১০ বছর আগে বিপিএলের যাত্রা শুরু হলেও এখনও ফ্রাঞ্চাইজি এই লিগটির কোনও কাঠামো দাঁড় হয়নি। প্রতি বছরই কোনও না কোনও বদল আসেই। নেই কোনও নিয়ম-নীতি। সবকিছুই হয় অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে। রেভিনিউ শেয়ারিং সিস্টেম তো অনেক দূরের কথা, আর্থিক ভিত্তি গড়ার কোনও সিস্টেম এখনও তৈরি করতে পারেনি বিসিবি। ফলে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান না হাওয়ায় দীর্ঘমেয়াদের জন্য পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা যায় না।

এসব অসঙ্গতি নিয়েই বিপিএল খেলে যাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল এইসব অসঙ্গতি দূর করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সাকিব অবশ্য জানালেন দায়িত্ব পেলে ২ মাসের মধ্যেই সব বদলে দেবেন, ‘বিপিএলের সিইও হলে আমার বেশিদিন লাগবে না। আমার ধারণা এক থেকে দুই মাস লাগবে সবকিছু ঠিক করতে। দুই মাসও লাগার কথা না, দুই মাস অনেক দূরের কথা বলছি। পুরনো সবকিছু বাদ দিয়ে নতুন করে আবার ড্রাফট হবে, ফ্রি টাইমে বিপিএল হবে। আধুনিক টেকনোলজি থাকবে। ব্রডকাস্ট ভালো থাকবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যু থাকবে।’

ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক বিপিএলের অসঙ্গতিগুলো নিয়ে বলেছেন, ‘বাজেট সংকট সম্ভবত (হাসি)। সদিচ্ছা থাকলে থেমে থাকার কিছু দেখি না। সদিচ্ছা থাকলে আমি তো কোনও কারণ দেখি না ডিআরএস থাকবে না, তিন মাস আগে ড্রাফট কিংবা অকশন কেন হবে না? টিমগুলো দুই মাস আগে থেকে কেন ঠিক হবে না?’

ক্রিকেটকে পুঁজি করতে না পারাকে সাংগঠনিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন সাকিব, ‘বাজেট ক্রিয়েট করতে পারেনি। ভ্যালু অ্যাড করতে পারেনি। এদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বল না পেলে কিছু একটা দিয়ে বল বানিয়ে ক্রিকেট খেলছে। এমন তো না জনপ্রিয়তা নেই। সবার পছন্দের খেলার বাজার থাকবে না বিশ্বাস করি না। দুঃখজনক। মার্কেটিংয়ের জায়গা থেকে এটা ব্যর্থতা।’

 

প্রধান সোর্সঃ বাংলা ট্রিবিউন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button